চাল-গমে ভর্তুকি: ভারতের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মামলা

প্রকাশিত: ১:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২২

চাল ও গম চাষে কৃষকদের মাত্রাতিরিক্ত ভর্তুকি দেওয়ার অভিযোগে ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) মামলা করার দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল শীর্ষ আইনপ্রণেতা। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের ২৮ সদস্য বাইডেন প্রশাসনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ দাবি জানিয়েছেন। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস।

ডব্লিউটিও’র নীতি লঙ্ঘন করে ভারত গম চাষে মোট ব্যয়ের অর্ধেকের বেশি ভর্তুকি দেওয়ায় মার্কিন চাষিরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন অভিযোগ করে অনেকদিন থেকেই এটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের গম রপ্তানিকারকদের সংগঠন ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটস। মার্কিন আইনপ্রণেতারাও এ নিয়ে সোচ্চার হওয়ায় বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে তারা।

চিঠিতে মার্কিন আইনপ্রণেতারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য উৎপাদকরা প্রতিযোগীদের তুলনায় স্পষ্টতই পিছিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে ভারতের। সেখানকার সরকার চাল ও গম উৎপাদনে মোট ব্যয়ের অর্ধেকরও বেশি ভর্তুকি দিচ্ছে, যেখানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মানুসারে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ গ্রহণযোগ্য।

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন টাই ও কৃষিমন্ত্রী টম ভিলস্যাকের কাছে পাঠানো চিঠিতে আইনপ্রণেতারা বলেছেন, আমরা অনুরোধ করছি, ভারতের ডব্লিউটিওর নীতিলঙ্ঘন প্রবণতা বন্ধ করতে দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তি মামলার পদক্ষেপ নিন।

গত ১৩ জানুয়ারি বাইডেন প্রশাসনের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর মাসখানেক আগে আরও ১৮ সিনেটর টাই ও ভিলস্যাকের কাছে একই দাবি জানিয়ে আরেকটি চিঠি দিয়েছিলেন।

ভারতের বিরুদ্ধে মামলা করতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের চিঠিকে স্বাগত জানিয়ে ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটস বলেছে, কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন সদস্য কৃষিমন্ত্রী ও বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে গম-চাল উৎপাদনে ভারতের ‘বিকৃত’ সহায়তা কর্মসূচির বিরুদ্ধে ডব্লিউটিওতে মামলার জন্য বলায় তারা খুশি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক পরামর্শক গ্রুপ ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব হুইট গ্রোয়ারসের প্রধান নির্বাহী চ্যান্ডলার গৌল বলেছেন, ডব্লিউটিও সদস্য হিসেবে ভারতকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে হবে এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে অন্যায় সুবিধা ও বিশ্ব বাণিজ্যকে বিকৃত করা যাবে না। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনায় আমরা সিনেটরদের প্রশংসা করি।

মার্কিন কৃষি দপ্তরের (ইউএসডিএ) ধারণা, আগামী ৩০ জুন শেষ হতে চলা বাণিজ্যবর্ষে ভারতের গম রপ্তানি ৫০ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছাতে পারে। এরপর তাদের হাতে আরও অন্তত ২ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন গম থেকে যাবে।

ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের এই নীতি আন্তর্জাতিক গম-চাল বাণিজ্যে গুরুতর প্রভাব ফেলছে। টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটির সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে তারা বলেছে, প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের চাষিরা প্রতিবছর ৫০ কোটি ডলারের বেশি আয় হারাচ্ছেন।