আশুলিয়ায় বিরিয়ানিতে কুকুরের মাংস দেওয়ার অভিযোগে কারাগারে দোকানি বার্তা বার্তা বিভাগ প্রকাশিত: ৭:০৮ পূর্বাহ্ণ, মে ১৭, ২০২২ ঢাকার আশুলিয়ায় বিরিয়ানিতে ‘কুকুরের মাংস’ দেওয়ার অভিযোগে রাজীব নামের এক দোকানিকে আটক করে পুলিশ। একই সঙ্গে ল্যাবে পরীক্ষার জন্য আলামতও সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তবে লিখিতভাবে কোনো অভিযোগকারী না থাকায় ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার (১৬ মে) দুপুরে তাকে ঢাকার আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালতের বিচারক রাজীবকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গ্রেফতার রাজীব বরিশাল জেলার মুলাদি থানার নুনচর গ্রামের চুন্ন হাওলাদারের ছেলে। খবর নিয়ে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত রোববার (১৫ মে) দুপুরে। ছেলের বায়না মেটাতে মা রুপালি বেগম আল্লারদান বিরিয়ানি হাউজ থেকে এক প্যাকেট বিরিয়ানি কিনে বাসায় নিয়ে যান। বিরিয়ানি প্যাকেটটি খুলে দেখতে পান মাংসের হাড় খুব চিকন ও কালো। স্বাদও নেই। এতে তার সন্দেহ হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয় শরীফ নামের এক ব্যক্তিকে জানান। এরপর খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ফারুক হোসেন নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘বিরিয়ানিতে কুকুরের মাংস দেওয়ার অভিযোগ তুলেই দোকানে হট্টোগোল শুরু হয়। পরপর কয়েকজন সমঝোতার প্রস্তাবে আসেন। দোকানি আপত্তি তুলতেই পুলিশ চলে আসে। পরে তাকে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, বিরিয়ানি হাউজের মালিক বারবার বলছিলেন, ল্যাবে পরীক্ষার পর আমাকে শাস্তি দেন। তবে কিছু উৎসুক জনতা বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে দোকানিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ বিষয়ে বিরিয়ানির ক্রেতা রুপালি বেগম বলেন, আমি কোথাও কোনো অভিযোগ করিনি। এটাও বলিনি এটি কুকুরের মাংস। শুধু বলেছি এটি গরু না খাসির মাংস। পুলিশ আমার সঙ্গে কোনো কথাও বলেনি। আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজের একটি শাখার ব্যবস্থাপক সায়েদ হোসেন বিল্লাল বলেন, ‘এটি ষড়যন্ত্র। আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট করতে কেউ পরিকল্পিতভাবে এমনটা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এক বছর হলো দোকানটি দিয়েছি। এখানে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার বিক্রি হয়। এতে অনেকেরেই হিংসা হয়। এছাড়া আমাদের আশুলিয়ায় আরও ছয়টি শাখা রয়েছে।’ কাঠগড়া বাজারের আলিম নামের এক কসাইয়ের কাছ থেকে নিয়মিত গরুর মাংস কেনা হয় জানিয়ে সায়েদ হোসেন বলেন, ‘কোনোদিন কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। ঘটনার দিনও তার কাছ থেকে মাংস আনা হয়। ঘটনার পর কয়েকজন টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিটমাটের প্রস্তাব দেন। রাজীব যখন রাজি হননি তখনই ঝামেলা শুরু। মাংস কেনার বিষয়ে জানতে কথা হয় স্থানীয় আলিম কসাইয়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মাংস আমি দিয়েছি। প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ কেজি গরু মাংস নেন তারা। একদিন মিস হলে দু-দিনের মাংস একদিনে নিয়ে যায়। ফ্রিজে রাখে। গরু জবাইয়ের ক্ষেত্রে আমাদের বাজার কমিটি প্রতিদিন যাচাই-বাছাই করে এখানে। অন্য কিছু করার কোনো সুযোগ নেই।’ এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুব্রত রায় বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় আনা হয়। আলামত হিসেবে মাংস জব্দ করে পরীক্ষার জন্য উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জনের কাছে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’ এসআই আরও বলেন, ‘কোনো অভিযোগকারী না থাকায় আটক রাজীবকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠাই। আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’ সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘আশুলিয়া থানার এক কর্মকর্তা মাংস পরীক্ষার জন্য যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এখনো আলামত হাতে পাইনি। আমাদের এখানে সম্ভব না হলে প্রয়োজনে ঢাকার ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠাবো।’ SHARES ঢাকা বিষয়: আটকআশুলিয়াবিরিয়ানি