তীব্র গরম থেকে বাংলাদেশ এখনই রেহাই পাচ্ছে না

MSTV MSTV

BD

প্রকাশিত: ১২:১১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

বাংলাদেশে ‘হিট ওয়েভ’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা রোববার পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারের এপ্রিল উষ্ণতম বলে জানিয়েছেন এক আবহাওয়াবিদ।

তীব্র গরম থেকে বাংলাদেশ এখনই রেহাই পাচ্ছে না। তাপপ্রবাহের সতর্কতা আরও ৭২ ঘণ্টা বাড়িয়ে (২৫ এপ্রিল)বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার সবশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপলগঞ্জের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ ,রংপুর, রাজশাহী ও রাজধানী ঢাকার বাদ বাকি জেলার ওপর মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আগামী তিনদিন সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এছাড়া ২৭ এপ্রিলের পর বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

জানা যায়,গত বুধবার বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মংলায় ৪১ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বার্তা সংস্থা এএফপি বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা গত ৩০ বছরের একই সময়ের গড়ের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির এএফপিকে বলেন, ‘এপ্রিল বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস। কিন্তু স্বাধীনতার পর এবারের এপ্রিলই সবচেয়ে উষ্ণ যাচ্ছে।’
স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত এর একটি কারণ বলে জানিয়েছেন তিনি। মাসের বাকি সময়টুকুও পরিস্থিতি এমনই থাকবে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে অত্যাধিক তাপমাত্রার কারণে দেশে বেড়েই চলেছে হিট স্ট্রোক ,এটি একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এখানে একজন রোগী মারা যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি বলে জানা গেছে।

জানা যায়,দেহের তাপমাত্রা যখন খুব বেশি ছাড়িয়ে যায়, তখন রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। শিশুদের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম তাই বেশি ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা।

এছাড়াও যারা দিনমজুর, শ্রমিক মাঠে-ঘাটে দীর্ঘ সময় ধরে একনাগারে রোদের মধ্যে কাজ করে তাদের মধ্যে এ হিট স্টোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থেকে। সুস্থ থাকতে হলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সবার আগে নিতে হবে।

এ অত্যাধিক তাপমাত্রায় হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে হলে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরে থেকে বাইরে যাওয়া যাবে না। দিনের বেলা বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা অথবা টুপি ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলে সুতির ঢিলেঢালা জামাকাপড় পড়তে হবে, বিশুদ্ধ খাবার পানি পান করতে হবে, একজন ব্যক্তির কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে , ঘামের সঙ্গে লবন ও পানি বের হয়ে যায় তাই ওরস্যালাইন ও ফলের রস খেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন অবশ্যই বিশুদ্ধ হয়।

যারা টানা একনাগারে দিনের বেলায় বাইরে রোদের মধ্যে কাজ করছেন তারা একনাগারে কাজ না করে কিছুক্ষণ ছায়ার মধ্যে বিশ্রাম নিয়ে তারপর আবার কাজ শুরু করবেন।

যদি হিট স্ট্রোকের মতো লক্ষণগুলো দেখা যায় ,যেমন মাথা ঘুরানো, মাথা ঝিমঝিম করা, বমি বমি ভাব, হৃদ স্পন্দন বেড়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া তাহলে সঙ্গে সঙ্গে রোগী নিজেই যেতে পারলে ভালো অথবা আশপাশে যদি কেউ থাকে তাহলে রোগীকে ছায়াযুক্ত শীতল স্থানে নিয়ে যেতে হবে এবং চোখে-মুখে পানির ঝাপটা দিতে হবে। জামাকাপড় টাইপ থাকলে ঢিলা করে দিতে হবে। নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।