কসবা নিজের অপকর্ম ঢাকতে যুবলীগ নেতার আশকারায় সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

MSTV MSTV

BD

প্রকাশিত: ১০:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে এক যুবলীগ নেতার আশকারায় সংবাদকর্মী মোঃ সাদ্দাম হোসাইনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, উপজেলার মাইজখার বাগুর গ্ৰামের মনিরুল ইসলাম তার স্ত্রী পারভিন বেগম ও তার ছেলে আমজাদুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত উপজেলা বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন।

এরমধ্যে গেল বছরের আগস্টের দিকে কোল্লাপাথর গ্রামের কামাল মিয়া স্ত্রী ফাতেমা আক্তার শিখা নামক এক নারী নাকি মাইজখার বাগুর গ্ৰামের মনিরুল ইসলামের ছেলে আমজাদুল ইসলামের নিকট থেকে দুটি সিএনজি ক্রয়ের কথা বলে ৮ লাখ টাকা ধার নিয়েছে,যা এখন ওই নারী পরিশোধ করছে না,এমন একটি অভিযোগ তুলে কসবা থানায় আমজাদুল ইসলাম বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। টাকা লেনদেনের প্রমাণস্বরূপ ওই নারীর স্বাক্ষরিত একটি অঙ্গীকারনামা দেখান তারা।

ওই সময় কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগ আহ্বায়ক আতাউর রহমান আমজাদুল ইসলামকে তার ভাগিনা দাবি করে প্রতিনিয়ত থানায় এ বিষয়টি নিয়ে জোর তদবির শুরু করেন।

অপরদিকে কোল্লাপাথরের ওই নারী অর্থ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং অঙ্গীকারনামায় তার স্বাক্ষরটি জাল বলেও দাবি করেন। তা সত্ত্বেও কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগ আহ্বায়ক আতাউর রহমান ও একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু কালাম আজাদ তাদের রাজনৈতিক পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে ওই নারীকে বেকায়দায় ফেলে গেল বছরের ২১ নভেম্বর সকাল ১১টায় কসবা থানা ভবনে সালিশের নামে নগদ ৩ লাখ টাকা আদায় করেন। যা থানা ভবনের ওইদিনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করলেই তার বাস্তব চিত্র দেখা যাবে।

এছাড়াও শিখা আক্তারের ছেলেদের সঙ্গে চলাফেরার সুবাদে তাদের বাড়িতে প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করতেন আমজাদ,এরই একপর্যায়ে তার বড় ছেলে রুবেল মিয়ার স্ত্রীকে কুপরামর্শ দিয়ে সংসারে বিবাদের সৃষ্টি করে সে, যার কারণে ওই সংসারটি ভেঙে গেছে বলেও জানিয়েছিলেন শিখা আক্তার। যার তথ্য প্রমাণ এখন আমাদের হাতে।

শুধু তাই নয় উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের মইনপুর গ্রামের মৃত হুমায়ুন কবিরের ছেলে জামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রীর মধ্যেও গীবত এবং মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিবাদের সৃষ্টি করেন আমজাদুল ইসলাম। যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়,এরপর তার স্ত্রী ও সন্তান তাকে ফেলে তার শ্বশুরবাড়িতে চলে যায়,আর এসব কারণে সিঙ্গাপুর প্রবাস ফেরত জামাল উদ্দিন মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে এমনটা জানিয়েছে জামাল উদ্দিনের মা লুৎফা বেগম।

ভুক্তভোগীদের থেকে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে এসব তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে এমনটা জানতে পারে আমজাদ গংরা,এরপর ৬ আগস্ট বিকালে কসবা টি-আলী বাড়ি মোড়ে সংবাদকর্মী মোঃ সাদ্দাম হোসাইনকে গতিরোধ করে আমজাদুল ইসলাম,তার বাবা মনিরুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফাসহ আরো বেশ কয়েকজন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে কসবায় কিভাবে তিনি সাংবাদিকতা করে তা দেখে দিবেন বলে হুমকি ধামকিদেন তারা, এরপর এ বিষয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় মোঃ সাদ্দাম হোসাইন বাদী হয়ে হুমকি প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে কসবা থানায় একটি জিডি করেন। যা তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পাওয়ায় আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন কসবা থানা পুলিশ।

এরপর ওই ঘটনার প্রায় দুই মাস পর অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ কর্মীর আগাম জিডি থাকা সত্ত্বেও কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগ আহ্বায়ক আতাউর রহমানের আশকারায় একটি স্ট্যাম্প ব্যবহার করে সংবাদকর্মী সাদ্দাম হোসাইনের স্বাক্ষর নকল করে অযৌক্তিক একটি অঙ্গীকারনামা তৈরি করে আদালতে আমজাদুল ইসলাম বাদী হয়ে সংবাদকর্মী বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই মামলায় বর্ণিত ঘটনার সাথে বাস্তবের কোনো সাদৃশ্য মিল নেই বলে জানিয়ে সংবাদকর্মী মোঃ সাদ্দাম হোসাইন বলেন,আমি প্রায় আট বছর যাবত এই জনপদের সিংহভাগ সংবাদ বলিষ্ঠ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রচার ও প্রকাশ করে আসছি,কিন্তু এদের মত এমন মিথ্যাবাদী ও বাটপার প্রকৃতির লোক আমি আর দেখিনাই, আমি বিশ্বাস করি সকল অশুভ অসুন্দরের উপর সত্য সুন্দরের জয় হবেই।

এদিকে কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগ আহ্বায়ক আতাউর রহমানের এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে কসবা উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য জানান,যুবলীগের যদি কেউ তার ব্যক্তিগত স্বার্থে কোন অনীতিক কর্মকান্ডে জড়িত হয়, দায়ভার সংগঠন নিবে না। আপনারা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন আমাদের উপজেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে কোন বাধা নেই।